Loading

Author: Jyotirmoy Nandy

চর্যাপদ: আধুনিক বাংলায়

বাংলা, এবং সেইসঙ্গে মৈথিলী, উড়িয়া, অহোমিয়া প্রভৃতি পূর্ব ভারতীয় ভাষার আদিগ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ বা সংক্ষেপে ‘চর্যাপদ’। বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ বিরচিত হাজার বছরের প্রাচীন এই গ্রন্থটি নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ, গবেষণা এ পর্যন্ত কম হয়নি। এতে সঙ্কলিত চর্যা বা কবিতা বা গানগুলোর গদ্যে-পদ্যে অনুবাদও অনেক হয়েছে। তবুও নিজের মতো করে একটা সরাসরি আধুনিক কাব্য ভাষান্তরের লোভ সামলাতে না

কবি নজরুল: স্মৃতির জানালায়

গত শতকের ষাটের দশকের গোড়ার দিকে আমার শিশুবয়সে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে ঠাকুরমার সঙ্গে একাধিকবার কলকাতা গিয়েছি। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে ফকার ফ্রেন্ডশিপ গোছের ছোট বিমানে আমরা কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে গিয়ে নামতাম। ১৯৬৫’র ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের যুদ্ধের পর তো দু দেশের মধ্যে যাতায়াত সেই যে বন্ধ হয়ে গেলো, সেটা খুললো ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু

লাল মৃত্যুর মুখোশ: এডগার অ্যালান পো’র গল্প

[মার্কিন কবি, ছোট গল্পকার, সম্পাদক, সমালোচক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোম্যান্টিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা এডগার অ্যালান পো (Edgar Allan Poe, ১৯ জানুয়ারি, ১৮‌০৯ – ৭ অক্টোবর, ১৮৪৯)’র লেখা বিখ্যাত গল্প ‘দা মাস্ক অব দা রেড ডেথ’ (The Masque of the Red Death) বর্তমান করোনাপীড়িত সময়ে বড় প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় ‘লাল মৃত্যুর মুখোশ’ শিরোনামে ধারাবাহিক অনুবাদের ও আপনাদের

মাকে নিয়ে

আমার প্রয়াতা মায়ের নাম স্মৃতি কণা নন্দী। ১৯৩৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় একটি হাসপাতালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা, মানে আমার মাতামহ অশ্বিনী কুমার দাশগুপ্ত আর মাতামহী জ্যোতির্ময়ী দাশগুপ্তা তখন কলকাতার চিৎপুর এলাকায়, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কাছে, একটা বাড়িতে থাকতেন বলে দিদিমা জ্যোতির্ময়ীর মুখে শুনেছি। মায়ের বাপের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী থানা (বর্তমানে

জীবনানন্দের দুটো কবিতা: মৌলিকতার প্রশ্নে

বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলে থাকেন, ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ও অধ্যাপক কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) তাঁর বিখ্যাত ‘বনলতা সেন’ কবিতাটি রচনা করেছিলেন মার্কিন কবি এডগার অ্যালান পো (১৮০৯-১৮৪৯)’র ‘টু হেলেন’ কবিতাটি অনুসরণে, এবং আরেক প্রখ্যাত কবিতা ‘হায় চিল’ ইংরেজ কবি উইলিয়াম বাটলার (ডব্লিউ. বি.) ইয়েটস (১৮৬৫-১৯৩৯)-এর ‘দা কার্লিউ’ অনুসরণে। এ কথা সত্যি হলে কিন্তু স্বীকার করতেই হবে যে,

এডগার অ্যালান পো’র দুটি কবিতা

[মার্কিন কবি, ছোট গল্পকার, সম্পাদক, সমালোচক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোম্যান্টিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা এডগার অ্যালান পো (Edgar Allan Poe, ১৯ জানুয়ারি, ১৮‌০৯ – ৭ অক্টোবর, ১৮৪৯)’র পরিচয় সাহিত্যামোদীদের কাছে নতুন করে দেয়ার কিছু নেই। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী এই প্রতিভাবান সাহিত্যিকের সারা জীবন কেটেছে নানা রকম যন্ত্রণা, আর্থিক দৈন্য ও মানসিক অস্থিরতার মধ্যে। বিশ বছর বয়স হবার

মনোরমা মাসি ও তাঁর জীবনে খানপুত্রদের ভূমিকা

[এ কাহিনির সব চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কারো সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া গেলে তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত বা কাকতালীয় বলেই মনে করতে হবে।] কী জানি কেন, মনোরমা মাসির জীবনের নানা পর্যায়ে খান বংশীয়রা বার বার অনিবার্য নিয়তির চেহারা নিয়ে হাজির হয়েছে। মাসি ছিলেন সে-আমলের এম. এ.। তখনও এ শহরে বিশ্ববিদ্যালয় হয় নি। অনার্স বা এম. এ.

বেদের নাসদীয় সূক্ত

[‘নাসদীয়’ শব্দটা এসেছে ‘ন+অসদ্’-এর সঙ্গে ‘ষ্ণ্য’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে। ‘সূক্ত’ মানে হলো ‘ভালো উক্তি’। অতএব ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১২৯ নং মন্ত্রে ধৃত এই সূক্তকে ‘অনস্তিত্ব বিষয়ক সু-উক্তি’ও বলা যায়। এটাকে ‘সৃষ্টিসূক্ত’-ও বলা হয়ে থাকে। ব্রহ্মাণ্ডতত্ত্ব বা মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্বের সঙ্গে এ সূক্ত সম্পর্কিত। বেদে দেবতাদের স্তব-স্তূতিমূলক যেসব সূক্ত আছে, সেগুলোর তুলনায় এ সূক্তটি একটু অন্যরকমের। ভারতীয়

মদালসা উপাখ্যান

[নামে কিবা আসে যায়– এ কথাটা আমরা বার বার বলি। প্রসঙ্গক্রমে আমরা টেনে আনি শেক্সপিয়রের ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ নাটকের সেই বিখ্যাত উক্তি: “What’s in a name? That which we call a rose” (নামে কিবা আসে যায়? গোলাপকে যে নামেই ডাকো…)। এ কথাটা দার্শনিক যুক্তির মাধ্যমে বলা হয়েছে মার্কণ্ডেয় পুরাণের ‘মদালসা উপাখ্যান’ বা ‘মদালসা উপদেশ’-এ। এটা

মানতের ডিম: চিনুয়া আচেবে’র গল্প

[প্রখ্যাত নাইজেরীয় কথাশিল্পী চিনুয়া আচেবে (Chinua Achebe), যাঁর পুরো নাম অ্যালবার্ট চিনুয়ালুমোগু আচেবে (Albert Chinụalụmọgụ Achebe), ১৯৩০-এর ১৬ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনাধীন নাইজেরিয়ার ওগিডিতে জন্ম নেন। মৃত্যু ২০১৩’র ২১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন শহরে। আচেবেকে আধুনিক আফ্রিকান সাহিত্যে সর্বাধিক পঠিত লেখক বলে মনে করা হয়। সর্বসম্মতভাবে আচেবে’র শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘থিংস ফল