Loading

Author: Jyotirmoy Nandy

ঝরাফুলগীতি

চুপচাপ টুপটাপ ঝরে যাচ্ছে সব ঝাঁকে ঝাঁকে শিউলির ঝরার উৎসব নীরবে ঝরছে সব, হাওয়াও কি জানে এতসব অনর্থক ঝরার কী মানে শিউলি ঝরিয়া গেলে গন্ধ তার ভাসে কিছুক্ষণ অতীতের করুণ উদ্ভাসে তারপর রুক্ষ দিন বাস্তবতা রোদ খরতর মুছে দেয় বেদনার বোধ মুছে দেয় সৌরভের রেশ সর্বশেষ কর্মঘর্মগন্ধে ঢাকে সব অবলেশ বাকিটুকু ঢাকে কিছু বেদনাবিলাসে বিলাপে

হে মহাবৃক্ষ

ডালপালা যেন ছুঁয়েছে অন্তরীক্ষ প্রণাম তোমায়, প্রণাম হে মহাবৃক্ষ তোমার ছড়ানো পাতাপল্লবে আলো আমার নয়ন জুড়ালো, হৃদয় জুড়ালো পাতায় পাতায় আলোছায়া করে খেলা তন্দ্রা আলসে মগন গহন বেলা শুকনো পাতারা ঝরে পড়ে ঘুরে ঘুরে বিজন দুপুরে স্মৃতির অন্তঃপুরে তুমি পরে নাও নবীন পাতার বেশ চেয়ে চেয়ে শুধু দেখছি নির্নিমেষ হে মহাবৃক্ষ, আকাশে তুলেছ শির তুমি

গাছের ছায়া, বনের মায়া

গাছের ছায়া, বনের মায়া ফিরিয়ে দিতে কি পারবি যা কিছু তুই গ্রাস করছিস পরির পাহাড়, সিআরবি জালালাবাদ, গোলপাহাড় বাটালি হিল, প্রবর্তক ঝিল্লীমুখর সুঁড়িপথের ফয়’স লেক আরণ্যক কিরির কিরির শব্দে কাটত সুতাটেঁইয়ের সুতো, শুনতে শুনতে ভরদুপুরে নিদ্রা ফিরে শুতো বাতাস ছুঁতো লালদিঘি আর কমলদহের জল আস্কারদিঘির বুকে পাহাড়ের ছায়ারা টলমল চিরকাল যে শহর জানি বনপাহাড়ের কন্যা

অ্যাড্রিয়ান হেনরি’র কবিতা

ব্রিটিশ কবি এবং চিত্রশিল্পী অ্যাড্রিয়ান হেনরি ছিলেন ‘লিভারপুল সিন’ (Liverpool Scene) নামের কবিতা-রক গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, এবং ‘লিভারপুল কবিকুল’ নামে প্রসিদ্ধদের মধ্যমণি। গত শতকের ষাটের দশকে যখন লিভারপুল থেকে উত্থান ঘটে বিশ্ব নাড়া দেয়া পপ সঙ্গীত গোষ্ঠী ‘বিটলস’-এর। তারই পাশাপাশি মার্সি নদীর তীরের এ শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো কবিতা এবং রক সঙ্গীতের সমন্বিত রূপের স্রষ্টা লিভারপুল সিনের।

মগধেশ্বরী: চট্টগ্রামের পল্লীজননী

বাংলায় ‘খোলা’ কথাটা বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়া– তিন পদাত্মক অর্থেই ব্যবহৃত হয়। ক্রিয়ার্থে ‘খোলা’ মানে হলো ‘উন্মুক্ত করা’, যেমন– দরজা খোলা, মানে খুলে দেওয়া। বিশেষণার্থে ‘খোলা’ মানে ‘উন্মুক্ত’, যেমন– খোলা দরজা । আর বিশেষ্য হিসেবে ‘খোলা’ মানে হলো ‘উন্মুক্ত স্থান বা পরিসর’। এ অর্থে শব্দটা একা বা অন্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়। যেমন–

কবিতা বাজার

            কবিতার বাজার বসেছে মহানগরীর চৌরাস্তার মোড়ে। একপাশে মাতৃভাষা ও অন্যান্য ভাষার মান্যগণ্য বিদেশি কবিরা তাঁদের কবিতাবলী নিয়ে বসে আছেন সম্মানের আসনে, তাঁদের সামনে বেজায় ভিড় জমিয়েছে দেশি ক্রেতার দল। দেখে মনে হলো, এদেশের মানুষ বংশ-বংশানুক্রমে বিদেশি মালের কদর করতে জানে বটে! দেশি প্রবীণ প্রতিষ্ঠিত কবিরাও বসেছেন উচ্চাসনে। তবে আজকাল

সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু

এখানে লঘু তো ওখানে গুরু ওখানে শেষ তো এখানে শুরু। এখানে গুরু তো ওখানে লঘু ওখানে বাজ তো এখানে ঘুঘু। সংখ্যাই যদি শেষ কথা তবে পৃথিবীতে গুরু পোকারা সংখ্যায় বেশি আলুদের চাপে চুপচাপ আলুবোখারা, কারণ তাহারা সংখ্যায় কম, যদিওবা স্বাদে গুরুতর সংখ্যাগুরু আলুরা ভাঙে আলুবোখারার কুঁড়েঘর। আলুরা কিন্তু সংখ্যালঘু আলুকাবলির ভূমিতে হঠাৎ করে আপনি-আজ্ঞে নেমে

ভেবে দেখেছো?

যা ভাবার কথা, সেটা নিয়ে নেই ভাবনা ভাত খেতে চাও, জুটবে মাড়, জাবনা। যা বলতে চাও, সেটা বলতে পাবে না বললেই যাবে পাগলা গারদে পাবনা। যা ভাবার নয়, তা নিয়েই দিন-রাত ভাবো ভাত পাবে যদি না বলো ‘গরম ভাত খাবো।’ বলার কথাটা গিলে ফেলো যদি — মারহাবা! দেখবে, ‘পাবো না’ বলে কিছু নেই — শুধু

পাবলো নেরুদার কবিতা: ফিদেল কাস্ত্রোর জন্যে

[চিলি’র সাম্যবাদী ও পরাবাস্তববাদী নোবেলবিজয়ী কবি পাবলো নেরুদা (১৯০৪-১৯৭৩) তাঁর এ কবিতায় কিউবান নেতা ফিদেল কাস্ত্রো (১৯২৬-২০১৬)’র জন্যে লাতিন আমেরিকা তথা সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষদের অনুভবকে তুলে ধরেছেন। নেরুদা এ কবিতাকে বলেছেন “আমার দেশের একপেয়ালা মদ” প্রিয় ফিদেলের জন্যে। কিউবান বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়ে কাস্ত্রো স্বদেশকে শুধু স্বাধীনই করেন নি, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একেবারে থাবার তলায় বসে

উর্দুর উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ-৩

ত্রয়োদশ শতাব্দীতে আমির খসরু যখন হিন্দাওয়ি ভাষা সৃষ্টি করছিলেন, তখন প্রকৃতপক্ষে ভারতবর্ষে হিন্দি বলে কোনো ভাষা ছিলো না, উর্দুর তো প্রশ্নই ওঠে না। উত্তর ভারতে যেটাকে বর্তমানে ‘হিন্দি বলয়’ পরিচয়ে চিনি, সেখানে তখন ব্রজভাষা, অবধি বা অওধি, ভোজপুরী, মৈথিলী ইত্যাদি কিছু ভাষা প্রচলিত ছিলো। খসরুর শহর দিল্লিতে প্রচলিত ছিলো ব্রজবুলি বা ব্রজভাষা। হিন্দাওয়ি সৃষ্টিতে খসরু