Loading

Author: Jyotirmoy Nandy

[কবিতাগুলো ২০১৯-২১-এর করোনা বিশ্বমারীকালে লেখা]   ১. গুটিপোকার গান   গুটির ভেতর গুটিয়ে গেছে সব পরান জুড়ে তুমুল কলরব তাকিয়ে থাকা বিস্ফারিত চোখে শ্রাবণ নামে বিবিক্ততার শোকে   লাগাতে যায় যখন জোড়াতালি চারটে দেয়াল বাজায় করতালি   মুঠির মধ্যে গুটিয়ে নিয়ে প্রাণ প্রাণ বাঁচাতে পাঠায় মৃদু ত্রাণ   তবুও ভবে বেড়েই চলে দেনা আইসোলেশান থেকে

পরাবাস্তববাদ ও পল এলুয়ারের কবিতা

সুররিয়ালিজম (Surrealism) কথাটা আমার গোচরে আসে সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে, উনিশশো একাত্তরে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর। আমি তখন সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ তরুণ। স্বাধীনতার হাত ধরে আমাদের দেশে কবিতা, নাটক (গ্রুপ থিয়েটার), চিত্রকলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে ছোটখাটো জোয়ারটা এসেছিলো, তাতে এই সুররিয়ালিস্টিক ধ্যানধারণার কিছু কিছু ব্যবহার বা প্রয়োগ দেখা যায়। তারুণ্যের উন্মাদনায় কবিতা আর গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত

পল এলুয়ারের একটি কবিতা

[শিল্পে-সাহিত্যে পরাবাস্তবতাবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রবর্তক, প্রখ্যাত ফরাসি কবি পল এলুয়ার (১৮৯৫-১৯৫২)-এর কবিতা ‘লিবার্তে’র বঙ্গানুবাদ ‘স্বাধীনতা’ শিরোনামে।] স্বাধীনতা আমার স্কুলের খাতায় আমার ডেস্কে আর গাছপালায় বালিতে তুষারে আমি তোমার নাম লিখি পড়ার সব পৃষ্ঠায় সব সাদা পৃষ্ঠায় পাথরে রক্তে কাগজে বা ছাইয়ে আমি তোমার নাম লিখি সোনালি ছবিগুলিতে যোদ্ধাদের হাতিয়ারে রাজাদের মুকুটে আমি তোমার নাম লিখি

তবুও…

ডানে বাঁয়ে খসে পড়ে, ধসে যায় খুঁটি সেই পথে তবু হেঁটে যাই, যেতে হয় তাই আজো হাঁটি ধীরে ধীরে গুটি গুটি যেতে যেতে হাত ধরে দেবে বরাভয় সেরকম হাত ক্রমে ক্রমে কমে আসে জন্মদিন হয়ে যায় মৃত্যুর স্মারক সকল মিলন ম্লান বিচ্ছেদ সন্ত্রাসে দাতাই হয়েছে আজ কি অপহারক পরিপূর্ণ মুঠি থেকে ঝরে যায় বালু সময়ের।

শীতগীতি

১. হিম নামছে হাড়ে, হিম জমছে প্রাণে, উষ্ণতা কি পেতে সবাই পারে? সূর্যতপা হতে ক’জন জানে! তোমার জানালা আলোয় ঝলোমল, অগ্নিস্থলী আগুনে উজ্জ্বল। বাইরে যেজন দাঁড়িয়ে অন্ধকারে দেখো না তার অশ্রু টলমল। হিমে ডুবুক অনন্ত তার রাত, হিমার্ত হোক রক্ত-মজ্জা তার। কোরো না তাতে করুণ দৃষ্টিপাত, সুদূরে রাখো হিমেল অন্ধকার। হিম নামছে, কুঁকড়ে যাচ্ছে সব।

মধুভাতে মধু নেই, তবে মধুর

মধুভাত চট্টগ্রাম, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় খাবার। মধুভাত নাম থেকে বোঝা যাচ্ছে এটা একধরনের ভাত, যদিও মধুর সাথে এ ভাতের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্ভবত মিষ্টিধুর স্বাদের জন্যেই এ ভাতের নাম মধুভাত রাখা হয়েছে। মধুভাত জিনিসটি সম্পূর্ণত কিরাত বা মঙ্গোলয়েড সংস্কৃতিজাত। মঙ্গোলয়েড বা কিরাত নৃগোষ্ঠীর এক ডজনেরও বেশি ধরনের জনগোষ্ঠী বাস করে

রামের ভগ্নিপতি ঋষ্যশৃঙ্গ ওরফে একশৃঙ্গ

রামের এক দিদি ছিল, সেটা অনেকেই হয়তো জানেন না। অযোধ্যাপতি দশরথের প্রধানমহিষী কৌশল্যা তখন প্রথম বারের মতো সন্তান সম্ভবা। নতুন যুবরাজ আসতে চলেছেন দশরথের ঘরে। তাই চারিদিকে উত্সবের আমেজ। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে, কৌশল্যা এক কন্যাসন্তান প্রসব করলেন। পুত্রসন্তানের পরিবর্তে প্রথমেই কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় রাজা-রাণী দুজনেই অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে পড়লেন। কৌশল্যার বোন ভার্ষিণী ও ভগ্নিপতি রোমপাদ

নোনা ইলিশ: চাটগাঁইয়া মোস্ট ফেভারিট

নোনা ইলিশ, খাঁটি চাঁটগাইয়া জবানে যাকে বলা হয় ‘নুনাইয়া ইলিশ’, চট্টগ্রামের আরেক জনপ্রিয়তম খাবার। এটা এতদঞ্চলের একটি প্রধান ঐতিহ্যবাহী খাদ্যও বটে। চটগ্রাম, বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সংলগ্ন জেলাগুলোতে ধর্ম, বর্ণ, বাঙালি, আদিবাসী নির্বিশেষে সকলেই নুনাইয়া ইলিশের পরম ভক্ত। নোনা ইলিশ দিয়ে রান্নার পদ অসংখ্য। তবে যেটা সবচেয়ে সরল পদ, সেই কুমড়োপাতা বা লাউপাতা দিয়ে

কাহলিল জিব্রানের কবিতা: প্রেমের চতুর্বিংশতি সঙ্গীত

আমি প্রেমিকের চোখ, আর আত্মার মদিরা, আর হৃদয়ের পুষ্টি। আমি একটি গোলাপ। আমার হৃদয় ঊষালগ্নে খুলে যায় আর কুমারীকন্যা আমাকে চুম্বন করে রাখে তার স্তনের উপর। আমি প্রকৃত সৌভাগ্যের গৃহ, এবং উৎস আনন্দের, এবং প্রারম্ভ শান্তি ও স্বস্তির। আমি মৃদু হাসি তার সৌন্দর্যের ঠোঁটে। যৌবন যখন আমাকে পরিগ্রহ করে তার শ্রমক্লান্তি ভুলে যায়, আর তার

কবি

সে নিজেই তার মুখাগ্নি করে চিতায় চড়িয়েছে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে পুড়ছে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রচণ্ড উত্তাপে গলে যাচ্ছে চোখের মণি নধর হৃৎপিণ্ড রসালো ফুসফুস ফেটে ছড়িয়ে যাচ্ছে মাথার ঘিলু হাড়ের মজ্জা আর এই নির্মম দহনযজ্ঞ দেখতে দেখতে সে-ই মেতেছে হাহাকারে বিলাপে রোদনে সবাই বলছে এগুলো তার কবিতা এসব আত্মদহনজনিত শোকগাথা… ……………………………………………………………………………………. ছবি: ‘দহমান’ ;