Loading

নোনা ইলিশ: চাটগাঁইয়া মোস্ট ফেভারিট

নোনা ইলিশ, খাঁটি চাঁটগাইয়া জবানে যাকে বলা হয় ‘নুনাইয়া ইলিশ’, চট্টগ্রামের আরেক জনপ্রিয়তম খাবার। এটা এতদঞ্চলের একটি প্রধান ঐতিহ্যবাহী খাদ্যও বটে। চটগ্রাম, বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সংলগ্ন জেলাগুলোতে ধর্ম, বর্ণ, বাঙালি, আদিবাসী নির্বিশেষে সকলেই নুনাইয়া ইলিশের পরম ভক্ত।

নোনা ইলিশ দিয়ে রান্নার পদ অসংখ্য। তবে যেটা সবচেয়ে সরল পদ, সেই কুমড়োপাতা বা লাউপাতা দিয়ে জড়ানো একটুকরো নুনাইয়া ইলিশ ভাজা পেলে একজন চাটগাঁইয়া অনায়াসে একথালা গরম ভাত উড়িয়ে দিতে পারে। একবার একজন বলেছিলেন, রান্না করতে হবে না, নাকের সামনে একটা নোনা ইলিশ ঝোলানো থাকলে, ওটা শুঁকে শুঁকেই তিনি ভাত খেয়ে নিতে পারবেন।

তাজা ইলিশের ভেতরকার নাড়িভুঁড়ি, ফুলকা ইত্যাদি বের করে ফেলে বিশেষ প্রক্রিয়ায় নুনে জারিয়ে, কড়া রোদে সামান্য শুকিয়ে তারপর কিছুদিন পাথর বা তক্তা বা পাটাতন চাপা দিয়ে রেখে নুনাইয়া ইলিশ তৈরি করা হয়। একই প্রক্রিয়ায় জারানো হয় ইলিশ মাছের ডিমও। এগুলো স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই দীর্ঘকাল সংরক্ষণ করা যায়।

এই নুন দিয়ে মাছ জারিয়ে সংরক্ষণ ও বিশেষ স্বাদবিশিষ্ট করার কায়দাটা চাটগেঁয়েরা সম্ভবত শিখেছে প্রতিবেশি আরাকানি মগ বা রাখাইনদের কাছ থেকে। এ ঐতিহ্যের শেকড় প্রোথিত সম্ভবত মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে।

নোনা ইলিশ আর ইলিশ মাছের ডিম চট্টগ্রামী খাদ্যতালিকায় ডেলিকেসির মধ্যে পড়ে। দামের দিক থেকেও এ দুটো পদ মহার্ঘ্য বটে।

নিচে ছবিতে আজকেই বাজার থেকে আনা একটা নুনাইয়া ইলিশ আর কয়েকটা ডিমের ছড়া। এগুলো দেখেই তাদের নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হল।